সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

ছায়ার জন্য

ছায়ার জন্য -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় গাছের ছায়ায় বসে বহুদিন, কাটিয়েছিকোনোদিন ধন্যবাদ দিইনি বৃক্ষকেএখন একটা কোনো প্রতিনিধি বৃক্ষ চাইযাঁর কাছে সব কৃতজ্ঞতাসমীপেষু করা যায়।ভেবেছি অরণ্যে যাব-সমগ্র সমাজ থেকে প্রতিভূ বৃক্ষকে খুঁজে নিতেসেখানে সমস্তক্ষণ ছায়াসেখানে ছায়ার জন্য কৃতজ্ঞতা নেইসেখানে রক্তিম আলো নির্জনতা ভেদ করে খুঁজে নেয় পথমুহূর্তে আড়াল থেকে ছুঠে আসে কপিশ হিংস্রতাগাঢ় অন্ধকার হলে আমি অসতর্ক অসহায়জানু […]

ছায়ার জন্য Read More »

জলের সামনে

জলের সামনে -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ব্রিজের অনেক নিচে জল, আজ সেইখানে ঝুঁকেছে মানুষকখনো মানুষ হয়ে উঠি আমি,কখনো মানুষ নই,তবুও সন্ধ্যায়ব্রিজের খিলান ধরে ঝুঁকে থেকে মনে হয় অবিকল মানুষেরই মতোমানুষের জল দেখা, জলের মানুষ দেখা পরস্পর মুখ;মানুষ দেখেছে জল বহুদিন মানুষ দেখেছে অশ্রজলমানুষ দেখেছে মুখ অশ্রুভেজা ব্রিজের অনেক নিচেহিম কালো জলেকালো জল বহু উর্ধ্বে দেখেছে কান্নায় সিক্ত গোপন

জলের সামনে Read More »

জীবন ও জীবনের মর্ম

জীবন ও জীবনের মর্ম -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় জীবন ও জীবনের মর্ম মুখোমুখি দাঁড়ালেআমি ভুল বুঝতে পারিআমার ক্ষামা চাইতে ইচ্ছে হয়।বুদ্ধের বুকের হাঁস হানা ঝাপটায়, আমি মাংসলোভী বিশাল বৃক্ষের ছায়া জলে ভাসে-আমি তমস্বান হয়ে ছুটে গেছিআমি ভুল বুঝতে পারি-বিস্মৃতিকে কতবার মনে ভেবেছি বিষন্নতাট্রেন লাইনের পশে এসে থমকে দাঁড়িয়েছে বনবাসী হরিণকয়লা খনির ভিতরের অপরাহ্নের মতন উদসীনতাআমাকে নদীর পাশেও স্রোতহীন

জীবন ও জীবনের মর্ম Read More »

জয়ী নই, পরাজিত নই

জয়ী নই, পরাজিত নই -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পাহাড়-চুড়ায় দাঁড়িয়ে মনে হয়েছিলআমি এই পৃথিবীকে পদতলে রেখেছিএই আক্ষরিক সত্যের কছে যুক্তি মূর্ছা যায়।শিহরিত নির্জনতার মধ্যে বুক টন্‌‌টন করে ওঠেহাল্‌কা মেঘের উপচ্ছায়ায় একটি ম্লান দিনসবুজকে ধূসর হতে ডাকেআ-দিগন্ত প্রান্তের ও টুকরো ছড়ানো টিরার উপর দিয়েভেসে যায় অনৈতিহাসিক হাওয়াঅরণ্য আনে না কোনো কস্তুরীর ঘ্রাণকিছু নিচে ছুটন্ত মহিলার গোলাপি রুমাল উড়ে

জয়ী নই, পরাজিত নই Read More »

ডাকবাংলোতে

ডাকবাংলোতে -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ফুটে উঠলো একটি দুটি টগরকন্ঠে মুক্তো- মালামরি মরিতোমরা আজ সকালবেলার প্রসণ্নতাএক মুহূর্তে শিশির ভেজা আলোনর্মছলে তোমরা অন্সীরী।‘কী সুন্দর ঐ টগর ফুল দুটো-খোঁপায় গুঁজবো আমি!’প্রাক-যুবতী বারান্দার প্রান্তে এসে আঁখি তুললো-সদ্য ভোর, বিরল হওয়া, ঠান্ডা রোদসাংকেতিক পাখির ডাক, উপত্যকায় নির্জনতাআমি বেতের ইজিচেয়ারে অলস।ফুলের থেকে চোখ ফিরিয়ে নারীর দিকেচোখই জানে চোখের মায়া দৃষ্টি জানে সৃষ্টির

ডাকবাংলোতে Read More »

তুমি

তুমি -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তুমি অপরুপ, তুমি সৃষ্টির যথেষ্ট পূজা পেয়েছো জীবনে?তুমি শুভ্র, বন্দনীয়, নারীর ভিতরে নারী, আপাতত, একমাত্র তুমিবাথরুম থেকে এলে সিক্ত পায়ে, চরণকমলযুগ চুম্বনে মোছার যোগ্য ছিল-তিন মাইল দুরে আমি ওষ্ঠ খুলে আছি, পূজার ফুলের মতো ওষ্ঠাধর আমি পুরোহিত, দেখো, আমার চামর, বাহু স্বতোৎসার শ্লোকহৃদয় অহিন্দু, মুখ সোমেটিক, প্রেমে ভিন্ন কোপটিক খৃষ্টানআশৈশব থেকে আমি পুরোহিত

তুমি Read More »

দুটি অভিশাপ

দুটি অভিশাপ -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সমুদ্রের জলে আমি থুতু ফেলেছিলামকেউ দেখেনি, কেউ টের পায়নিপ্রবল ঢেউ-এর মাথায় ফেনার মধ্যেমিশে গিয়েছিল আমার থুতুতবু আমার লজ্জা হয়, এতদিন পর আমি শুনতে পাইসমুদ্রের অভিশাপ।মেল ট্রেনের গায়ে আমি খড়ি দিয়ে এঁকেছিলামনারীর মুখকেউ দেখেনি, কেউ টের পায়নিএমনকি, সেই নারীরও চোখের তারা আঁকা ছিল নাএক স্টেশন পার হবার আগেই বৃষ্টি, প্রবল বৃষ্টিহয়তো বৃষ্টির

দুটি অভিশাপ Read More »

দ্বারভাঙা জেলার রমণী

দ্বারভাঙা জেলার রমণী -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় হাওড়া ব্রীজের রেলিং ধরে একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়েছিলদ্বারভাঙা জেলা থেকে আসা টাট্‌কা রমনীব্রীজের অনেক নিচে জল, সেখানে কোনো ছায়া পড়ে নাকিন্তু বিশাল এক ভগবতী কুয়াশা কলকাতার উপদ্রুত অঞ্চল থেকেগড়িয়ে এসেসভ্যতার ভূমধ্য অরিন্দে এসে দাঁড়ালোসমস্ত আকাশ থেকে খসে পড়লো ইতিহাসের পাপমোচানবারী বিষণ্ণতাক্রমে সব দৃশ্য, পথ ও মানুষ মুছে যায়, কেন্দ্রবিন্দুতে শুধু রইলো

দ্বারভাঙা জেলার রমণী Read More »

ধান

ধান -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় হলুদ শাড়ি আর পরো না, এবার মাঠে হলুদ ধান ফলেনিঘরে তোমার হল্‌দে পর্দা! মিনতি করি খুলে রাখোএবার মাঠে হলুদ ধান ফলেনি।এপাড়া জুড়ে সানাই বাজে, ওপাড়া জুড়ে শামিয়ানাব্যস্ত মানুষ, সুখী মানুষ, শঙ্খ আর উদ্ধ্বনি লাল চেলিসবই থাকুক, বন্ধ রাখো গায়ে-হলুদএবার মাঠে হলুদ ধান ফলেনি আয় কাক আয় কাকের পাল আয়রে আয়-গোয়াল ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে

ধান Read More »

নিরাভরণ

নিরাভরণ -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পায়ে তোমার কাঁটা ফুটেছে, উচ্চাকাঙ্ক্ষা?তুমি তাহলে পিছনে থাকোবন্ধু ছিলে উদাসীনতা, তোমারও সাধ গৃহী হতে?ডাইনে যাওপোশাক, তুমি ছিন্ন হবে? শান্ত, তোমার তৃষ্ণা পাবে?জিরোও এই গাছের নিচেহলুদ বই, শাদা, বোতাম, কৃতজ্ঞতা, চাবির দু:খ, বিদায় দাওআমার আর সময় নেই, আমি এখনপেরিয়ে মজা দিঘির কোণ প্রণাম করে অরণ্যের সিংহাসনর, সামনে ঘুরেদিগন্তের চেয়েও একটু দূরে যাবো।।

নিরাভরণ Read More »

Verified by MonsterInsights