ছেঁড়া পাতা

কবিতার পাতায় হৃদয়ের শব্দ

জীবনানন্দ দাশ

শিকার

শিকার -জীবনানন্দ দাশ ভোর;আকাশের রং ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল:চারিদিকে পেয়ারা ও নোনার গাছ টিয়ার পালকের মতো সবুজ।একটি তারা এখনো আকাশে রয়েছে :পাড়াগাঁর বাসরঘরে সবচেয়ে গোধূলি-মদির মেয়েটির মতো;কিংবা মিশরের মানুষী তার বুকের থেকে যে মুক্তা                  আমার নীল মদের গেলাসে রেখেছিলহাজার হাজার বছর আগে এক রাতে তেমনি-তেমনি একটি […]

শিকার Read More »

হরিণেরা

হরিণেরা -জীবনানন্দ দাশ স্বপ্নের ভিতরে বুঝি–ফাল্গুনের জ্যোৎস্নার ভিতরে।দেখিলাম পলাশের বনে খেলা করে হরিণেরা; রূপালি চাঁদের হাত শিশিরে পাতায়;বাতাস ঝরিছে ডানা — মুক্তা ঝ’রে যায় পল্লবের ফাঁকে ফাঁকে-বনে বনে-হরিণের চোখে;হরিণেরা খেলা করে হাওয়া আর মুক্তার আলোকে। হীরের প্রদীপ জ্বেলে শেফালিকা বোস যেন হাসেহিজল ডালের পিছে অগণন বনের আকাশে,– বিলুপ্ত ধূসর কোন পৃথিবীর শেফালিকা, আহা,ফাল্গুনের জ্যোৎস্নায় হরিণেরা জানে শুধু তাহা। বাতাস ঝাড়িছে

হরিণেরা Read More »

বেড়াল

বেড়াল -জীবনানন্দ দাশ সারাদিন একটা বেড়ালের সঙ্গে ঘুরে ফিরে কেবলি আমার দেখা হয়:গাছের ছায়ায়, রোদের ভিতরে, বাদামি পাতার ভিড়ে;কোথাও কয়েক টুকরো মাছের কাঁটার সফলতার পরতারপর সাদা মাটির কঙ্কালের ভিতরনিজের হৃদয়কে নিয়ে মৌমাছির মতো নিমগ্ন হয়ে আছে দেখি;কিন্তু তবুও তারপর কৃষ্ণচূড়ার গায়ে নখ আঁচড়াচ্ছে,সারাদিন সূর্যের পিছনে পিছনে চলেছে সে।একবার তাকে দেখা যায়,একবার হারিয়ে যায় কোথায়।হেমন্তের সন্ধ্যায়

বেড়াল Read More »

সুদর্শনা

সুদর্শনা -জীবনানন্দ দাশ একদিন ম্লান হেসে আমিতোমার মতন এক মহিলার কাছেযুগের সঞ্চিত পণ্যে লীন হতে গিয়েঅগ্নিপরিধির মাঝে সহসা দাঁড়িয়েশুনেছি কিন্নরকন্ঠ দেবদারু গাছে,দেখেছ অমৃতসূর্য আছে। সবচেয়ে আকাশ নক্ষত্র ঘাস চন্দ্রমল্লিকার রাত্রি ভালো;তবুও সময় স্থির নয়,আরেক গভীরতর শেষ রূপ চেয়েদেখেছে সে তোমার বলয়। এই পৃথিবীর ভালো পরিচিত রোদের মতনতোমার শরীর; তুমি দান করোনি তো;সময় তোমাকে সব দান করে মৃতদার

সুদর্শনা Read More »

অন্ধকার

অন্ধকার -জীবনানন্দ দাশ গভীর অন্ধকারের ঘুম থেকে নদীর চ্ছল চ্ছল শব্দে জেগে উঠলাম আবার;তাকিয়ে দেখলাম পান্ডুর চাঁদ বৈতরণীর থেকে তার অর্ধেক ছায়া             গুটিয়ে নিয়েছে যেনকীর্তিনাশার দিকে। ধারসিড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়েছিলাম- পউষের রাতে-             কোনোদিন আর জাগব না জেনেকোনোদিন জাগব না আমি- কোনোদিন জাগব না আর- হে নীল

অন্ধকার Read More »

কমলালেবু

কমলালেবু -জীবনানন্দ দাশ একবার যখন দেহ থেকে বার হয়ে যাবআবার কি ফিরে আসব না আমি পৃথিবীতে?আবার যেন ফিরে আসিকোনো এক শীতের রাতেএকটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়েকোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে।

কমলালেবু Read More »

শ্যামলী

শ্যামলী -জীবনানন্দ দাশ শ্যামলী, তোমার মুখ সেকালের শক্তির মতন:যখন জাহাজে চড়ে যুবকের দলসুদূর নতুন দেশে সোনা আছে বলে,মহিলারি প্রতিভায় সে ধাতু উজ্জ্বলটের পেয়ে, দ্রাক্ষা দুধ ময়ূরশয্যার কথা ভুলেসকালের রূঢ় রৌদ্র ডুবে যেত কোথায় অকূলে। তোমার মুখের দিকে তাকালে এখনোআমি সেই পৃথিবীর সমুদ্রে নীল,দুপুরের শূন্য সব বন্দরের ব্যথা,বিকেলের উপকন্ঠে সাগরের চিল,নক্ষত্র, রাত্রির জল, যুবাদের ক্রন্দন সব–শ্যামলী, করেছি

শ্যামলী Read More »

দুজন

দুজন -জীবনানন্দ দাশ ‘আমাকে খোঁজো না তুমি বহুদিন-কতদিন আমিও তোমাকেখুঁজি নাকো;- এক নক্ষত্রের নিচে তবু-একই আলোপৃথিবীর পারেআমরা দুজনে আছি; পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়,প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়,হয় নাকি?’- বলে সে তাকাল তার সঙ্গিনীর দিকে;আজ এই মাঠ সূর্য সহধর্মী অঘ্রাণ কার্তিকেপ্রাণ তার ভরে গেছে। দুজনে আজকে তারা চিরস্থায়ী পৃথিবীর ও

দুজন Read More »

অবশেষে

অবশেষে -জীবনানন্দ দাশ এখানে প্রশান্ত মনে খেলা করে উঁচু উঁচু গাছ।সবুজ পাতার পরে যখন নেমেছে এসে দুপুরের সূর্যের আঁচনদীতে স্মরণ করে একবার পৃথিবীর সকাল বেলাকে।আবার বিকেল হলে অতিকায় হরিণের মতো শান্ত থাকে।এই সব গাছুগুলো; -যেন কোন দূর থেকে অস্পষ্ট বাতাসবাঘের ঘ্রাণের মতো হৃদয়ে জাগায়ে যায় ত্রাস;চেয়ে দেখ ইহাদের পরস্পর নীলিম বিন্যাসনড়ে উঠে ত্রস্ততায়;- আধো নীল

অবশেষে Read More »

স্বপ্নের ধ্বনিরা

স্বপ্নের ধ্বনিরা -জীবনানন্দ দাশ স্বপ্নের ধ্বনিরা এসে বলে যায়: স্থবিরতা সব চেয়ে ভালো;              নিস্তব্ধ শীতের রাতে দীপ জ্বেলে              অথবা নিভায়ে দীপ বিছানায় শুয়েস্থবিরের চোখে যেন জমে ওঠে অন্য কোন বিকেলের আলো।               সেই আলো চিরদিন হয়ে থাকে স্থির, 

স্বপ্নের ধ্বনিরা Read More »

Verified by MonsterInsights