এগারোই সেপ্টেম্বর – তসলিমা নাসরিন উঁচু দুটো বাড়ির পতন মানে উঁচু কিছুর পতনঅহঙ্কারের পতনমহাশক্তির পরাশক্তির অহঙ্কারের পতনতিমির গায়ে খলসে মাছের কামড় লাগলে তিমির বুঝি মান যায় না!সাকুল্যে তিন হাজার মানুষের কথা বলছো!মৃত্যুর কথা বলছো।হাউ মাউ করে কাঁদছো যে!মানুষের জন্য কাঁদছো?এ তো দেখছি সত্যিই মাছের মায়ের কান্না গো! এত শোক কেন!এত কেন হাহাকার!সাগর বানিয়ে দিচ্ছ চোখের […]
তিন চার পাঁচ – তসলিমা নাসরিন লোকটি বেরোলো ঘর থেকে, মুখে স্মিত হাসি,পাড়ায় বলাবলি হয়, হাসিটি বেশ মানায় ও মুখে,বয়স ষাট পেরিয়েছে কেউ বলবে না, স্ত্রীটিরও বেশ চোখ কাড়া রূপ।আজ দুপুরবেলা লোকটি একাই বেরোলো,একাই সে ভাবলো আজ ও বাড়িতে যাবে, ও বাড়ির যুবতীটিকদিন ধরে কেমন কেমন চোখে যেন তাকাচ্ছে!হাত ধরলেই যুবতী গলে যাবে, লোকটি নিশ্চিত,মোম
ও মেয়ে শোনো – তসলিমা নাসরিন তোমাকে বলেছে –আস্তে, বলেছে –ধীরে.বলেছে –কথা না,বলেছে –চুপ।বলেছে– বসে থাকো,বলেছে– মাথা নোয়াও,বলেছে — কাঁদো। তুমি কি করবে জানো?তুমি এখন উঠে দাঁড়াবেপিঠটা টান টান করে, মাথাটা উঁচু করে দাঁড়াবে,তুমি কথা বলবে, অনর্গল বলবে, যা ইচ্ছে তাই বলবে,জোরে বলবে, চিৎকার করে বলবে,এমন চিৎকার করবে যেন ওরা দুহাতে ওদের কান চেপে রাখে।ওরা তোমাকে বলবে, ছি
যা ইচ্ছে তাই – তসলিমা নাসরিন ‘শিউলি মেয়েটি এমন মিষ্টি করে হাসে আবার এমন কঠিন করে তাকায় যে না পারি চোখ সরাতে, না পারি রাখতে।’ অরুণ বোধহয় বলল, নাকি সন্দীপ বলল, দুজনের মধ্যে কেউ একজন বলেছে। এমনও হতে পারে কেউ বলেনি, আমার মন বলেছে। আমাদের জাহাজটি বিদ্যাসাগর সেতুর তল দিয়ে হাওড়া সেতুর তল দিয়ে কোথায় যাচ্ছে কে জানে, যতদূর
পদ্মাবতী – তসলিমা নাসরিন স্বাতী আর শাশ্বতী ছিল, ওদের মধ্যে কী করে যেন চলে এলো পদ্মাবতী, স্বর্গ থেকে উড়ে এল, কোনও হাওয়া তাকে এনে দিল, স্বপ্ন তাকে এনে দিল নাকি এ পাশের বাড়ির বউ কেউ কিচ্ছু জানে না। ফিনফিনে শাড়িটি আর ছোটখাটো যা ছিল গাএ, খুলে ফেলে সামনে এসে দাঁড়ালো পদ্মাবতী রূপবতী । স্বাতীর দুটো হাত আপনাতেই উঠে এলো
নারী-জন্ম – তসলিমা নাসরিন তাদের জন্য আমার করুণা হয় যারা নারী নয় দুর্ভাগাদের জন্য আমার দুঃখ হয়, যারা নারী নয়। অবিশ্বাস্য এই শিল্প, অতুলনীয় শিল্প এই নারী, বিশ্বের বিস্ময়, বিচিত্রিতা। আমি নারী, বারবার চাই, শতবার চাই নারী হতে, নারী হয়ে জন্ম নিতে। সহস্র জন্ম চাই আমি, নারী জন্ম চাই। নারীর প্রেম চাই, তার কামরসে স্নান চাই, মৈথুন চাই। মৈথুনে মোহাচ্ছত
মন উঠো – তসলিমা নাসরিন মন তুমি ওঠো, ওঠো তুমি, তুমি ওঠো মন,মন মন মন ওঠো মন ওঠো মন তুমি ওঠো ওঠো মনমন ওঠো তুমিওঠো তুমি মনমন মন মনওঠো, লক্ষ্মী মন, তুমি ওঠো এবার,ওঠো ওই পুরুষ থেকে, মন ওঠো,ওঠো তুমি, শেকল ছিঁড়ে ওঠো, ভালোবাসার শক্ত শেকলটা ছিঁড়ে এখন ওঠোতুমি তোমার মত করে কথা বলো,তুমি তোমার
ফেস অফ – তসলিমা নাসরিন মেয়েটি আসছেমুখটি পোড়ামুখটি এখন আর মুখের মত দেখতে নয়,এক তাল কাদার ওপর দিয়ে যেন দৈত্য হেঁটে গেল,বীভৎস মুখটি। মুখ বলতে আসলে কিছু আর নেই।সে কোনও অ্যাসিড হাতে নিয়ে আসছে না,কোনও অ্যাসিড সে ছুঁড়বে না তোমার মুখে,সে এত নিষ্ঠুর নয়, এত নিষ্ঠুর সে হতে পারে না,তোমার মুখটিকে তোমার মুখ থেকে সে
নষ্ট মেয়ে – তসলিমা নাসরিন ওরা কারো কথায় কান দেয় না, যা ইচ্ছে তাই করে,কারও আদেশ উপদেশের তোয়াককা করে না,গলা ফাটিয়ে হাসে, চেঁচায়, যাকে তাকে ধমক দেয়নীতি রীতির বালাই নেই, সবাই একদিকে যায়, ওরা যায় উল্টোদিকেএকদম পাগল!কাউকে পছন্দ হচ্ছে তো চুমু খাচ্ছে, পছন্দ হচ্ছে না, লাত্থি দিচ্ছেলোকে কি বলবে না বলবে তার দিকে মোটেও তাকাচ্ছে
পারো তো ধর্ষণ করো – তসলিমা নাসরিন আর ধর্ষিতা হয়ো না, আর নাআর যেন কোনও দুঃসংবাদ কোথাও না শুনি যে তোমাকে ধর্ষণ করেছেকোনও এক হারামজাদা বা কোনও হারামজাদার দল।আমি আর দেখতে চাই না একটি ধর্ষিতারও কাতর করুণ মুখ,আর দেখতে চাই না পুরুষের পত্রিকায় পুরুষ সাংবাদিকের লেখা সংবাদপড়তে পড়তে কোনও পুরুষ পাঠকের আরও একবার মনে মনে
