অমরাবতী
অমরাবতী -অমিয় চক্রবর্তী (•••দিব্যানি ধামানি•••) কে-সে প্রাণ এই প্রাণ উর্মিল জলের কিনারায় অমরার দুই পারে একটি সন্ধানে নিয়ে যায়- শােনাে- অদৃশ্যের নীলাম্বনে ঢেকে স্বর্ণগতি চিরদিন এই দিনে দিয়ে গেল সে-কে।
অমরাবতী -অমিয় চক্রবর্তী (•••দিব্যানি ধামানি•••) কে-সে প্রাণ এই প্রাণ উর্মিল জলের কিনারায় অমরার দুই পারে একটি সন্ধানে নিয়ে যায়- শােনাে- অদৃশ্যের নীলাম্বনে ঢেকে স্বর্ণগতি চিরদিন এই দিনে দিয়ে গেল সে-কে।
শঙ্করাভরণ -অমিয় চক্রবর্তী ফেলাে ছায়া ফেলো রঙ কবিতার কাঁচে রঙীন আগুনী কাঁচে ঘন মায়া, ঘন মায়া। কাঠের সবুজি দীপে গাছ, এলের আলাের নীলে মাছ, শাঁখে সাদা ছায়া নাচে হলুদে বালির নাচে, দ্রুত বাঁচে আমার কথার কাঁচে।। কখন চোখের নীচে পৃথিবী ছায়া সে মুখর আদিম ত্রাসে বাদামী মাঠের আকাশে। ঘর, ঢং ঢং, কত রঙ, গান ভাঙা
শৈলপত্র -অমিয় চক্রবর্তী ঠাণ্ডা হাওয়া শিরিশিরি গায়ে লাগছে শুনছি পাতার ইশারা, কুহুর ব্যঞ্জনা, কাঠবেড়ালির ঝুপঝাপ ; উচু নিচু জমি, ছাগল গােরু চরা পাহাড়ি ছােট্ট ছেলের তদারকে ; উত্তরে হিমবান পর্বত আকাশচুম্বী মন্তকে ঐ জাগ্রত, সাদা জটার নিম্নধারী গ্নেশিয়ার স্পষ্ট চোখে পড়ল। “শােননা, নদী যেমন সমুদ্রের দিকে ধাবিত হয় পৃথিবী যেমন সূর্যের দিকে তেমনি আমার মন
এই বৃষ্টি কবিতা -অমিয় চক্রবর্তী চিন্তার সমস্ত রং ধুয়ে গেছে শাদা হয়ে মনের প্রহরী ভিজছে ছাতি হাতে নিঃঝুম প্রহরে, ঝুপঝুপ বৃষ্টির গলিতে বাসনার আলােগুলাে ঝিমিয়ে ঝাপসা জ্বলে পাশে। হে বিরতি ঘন রাত্রে কোনখানে একা স্তব্ধ চেয়ে আছ : মেঘে-মেঘে ভয়ংকর আসন্নতা, বােবা বুক চিরে ঝলে বর্ষার বিজলি শঙ্কাহারা, শুধু মেনে নেওয়া বেলা, প্রবাসে যেমন ।।
অন্নদাতা -অমিয় চক্রবর্তী পাথরে মোড়ানো হৃদয় নগর জন্মে না কিছু অন্ন— এখানে তোমরা আসবে কিসের জন্য? বেচাকেনা আর লাভের খাতায় এখানে জমানো রক্তপণ্য— যারা দান দেয় তারা মুনাফায় সাধুতার সুদ কষে তবে হয় দাতা, নয়তো তারাও রাষ্ট্রচাকায় পিষ্ট, দরদী নাগর: তাদের দেওয়ার ফলাবে না ধান শান-বাঁধা কলকাতা। আসো যদি তবে শাবল হাতুড়ি আনো ভাঙার যন্ত্র,
বিনিময় -অমিয় চক্রবর্তী তার বদলে পেলে সমস্ত ঐ স্তব্ধ পুকুর নীল-বাঁধানো স্বচ্ছ মুকুর আলোয় ভরা জল ফুলে নোয়ানো ছায়া-ডালটা বেগনি মেঘের ওড়া পালটা ভরলো হৃদয়তল একলা বুকে সবই মেলে। তার বদলে পেলে শাদা ভাবনা কিছুই-না-এর খোলা রাস্তা ধুলো-পায়ের কান্না-হারা হাওয়া চেনা কণ্ঠে ডাকলো দূরে সব-হারানো এই দুপুরে ফিরে কেউ-না-চাওয়া। এও কি রেখে গেলে।
উজানী -অমিয় চক্রবর্তী সকাল উদয়বিষণ্ণ মেঘলা সমুদ্রে; সিংহল ঝাপসা উঠছে নারকলবন পাহাড়মাথায়, বোটের ডেকে চলি ডাঙার দিকে, হাতে কফি-পেয়ালা— যাত্রীরা তাস-খেলায় মত্ত, সমুদ্র-আসমান-দ্বীপ জানে না দুই জগতের মধ্যে আছি, তিন জগৎ, মাটির মানুষের জলের, নীল-শাদার কেরামতি শূন্যে, সিন্ধু-শকুনের পাখায় অদৃশ্য তীর; হঠাৎ মন ঘুরল সংকেতে, মালাবার পাহাড়ে, বোম্বাইয়ে, সেই সমুদ্র-তোরণ অগণ্য যাওয়া-আসার; কেন অন্যত্র আছি,
কোথায় চলছে পৃথিবী -অমিয় চক্রবর্তী তোমারও নেই ঘরআছে ঘরের দিকে যাওয়া।সমস্ত সংসারহাওয়াউঠছে নীল ধূলোয় সবুজ অদ্ভূত;দিনের অগ্নিদূতআবার কালো চক্ষে বর্ষার নামে ধার।কৈলাস মানস সরোবরঅচেনা কলকাতা শহর—হাঁটি ধারে ধারেফিরি মাটিতে মিলিয়েগাছ বীজ হাড় স্বপ্ন আশ্চর্য জানাএবং তোমার আঙ্কিক অমোঘ অবেদনআবর্তননিয়েকোথায় চলছে পৃথিবী।আমারও নেই ঘরআছে ঘরের দিকে যাওয়া।
বৃষ্টি -অমিয় চক্রবর্তী কেঁদেও পাবে না তাকে বর্ষার অজস্র জলধারে। ফাল্গুন বিকেলে বৃষ্টি নামে। শহরের পথে দ্রুত অন্ধকার। লুটোয় পাথরে জল, হাওয়া তমস্বিনী; আকাশে বিদ্যুৎজ্বলা বর্শা হানে ইন্দ্রমেঘ; কালো দিন গলির রাস্তায়। কেঁদেও পাবে না তাকে অজস্র বর্ষার জলধারে। নিবিষ্ট ক্রান্তির স্বর ঝরঝর বুকে অবারিত। চকিত গলির প্রান্তে লাল আভা দুরন্ত সিঁদুরে পরায় মুহূর্ত টিপ,
রাত্রি -অমিয় চক্রবর্তী অতন্দ্রিলা, ঘুমোওনি জানি তাই চুপি চুপি গাঢ় রাত্রে শুয়ে বলি, শোনো, সৌরতারা-ছাওয়া এই বিছানায় —সূক্ষ্মজাল রাত্রির মশারি— কত দীর্ঘ দুজনার গেলো সারাদিন, আলাদা নিশ্বাসে—এতক্ষণে ছায়া-ছায়া পাশে ছুঁই কী আশ্চর্য দু-জনে দু-জনা— অতন্দ্রিলা, হঠাত্ কখন শুভ্র বিছানায় পড়ে জ্যোত্স্না, দেখি তুমি নেই।